বিশেষজ্ঞরা বলছেন,শীতের সকালে হাটতে যাওয়া নিরাপদ নয় - Majaru.com

Breaking

Post Top Ad

Tuesday, 31 December 2024

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,শীতের সকালে হাটতে যাওয়া নিরাপদ নয়

 

  ডেস্ক রিপোর্ট, ৩১ডিসেম্বর: বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি থাকলে সকালে হাঁটতে যাওয়া সাধারণত পরামর্শযোগ্য নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষিত বাতাসে দীর্ঘক্ষণ থাকা শ্বাসযন্ত্র এবং হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।  

বায়ু দূষণ বলতে বায়ুতে ক্ষতিকর উপাদান, যেমন PM2.5 এবং PM10, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং অন্যান্য বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতিকে বোঝায়, যা মানবস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং বিষাক্ত বায়ু কণার কারণে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। শীতল আবহাওয়া এবং কম বাতাসের গতি এই দূষণকে দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে, যার ফলে ধোঁয়াশা বা স্মগের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বাইরে হাঁটা বিশেষ করে হাঁপানি, অ্যালার্জি বা হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।  


সকালের সময়, বিশেষ করে শহর এলাকায়, দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। ঠান্ডা আবহাওয়া এবং কম প্রবাহিত বাতাস দূষিত কণাগুলোকে মাটির কাছাকাছি আটকে রাখে। ফলে এই সময়ে হাঁটলে PM2.5 এবং PM10 কণা ও বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসনালীতে জ্বালা, হাঁপানি বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু, বয়স্ক এবং পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা এই পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।  


দূষণ থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ  

যদি দূষণের মধ্যেও হাঁটতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে নিচের কিছু সতর্কতা অনুসরণ করা উচিত:  


১. AQI চেক করুন: হাঁটতে যাওয়ার আগে বায়ুর মান সূচক (AQI) অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকে পরীক্ষা করুন। ১০০-এর বেশি AQI মান অস্বাস্থ্যকর এবং ২০০-এর বেশি অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়।  


২. সময় নির্বাচন করুন: সকাল ও সন্ধ্যায় দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। দুপুরের দিকে হাঁটতে যাওয়া নিরাপদ হতে পারে, কারণ তখন সূর্যের আলো এবং বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ, দূষিত বাতাসকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে দিতে সহয়তা করে।  


৩. মাস্ক ব্যবহার করুন: উচ্চমানের মাস্ক (যেমন N95 বা N99) ব্যবহার করুন, যা সূক্ষ্ম কণাগুলোকে ফিল্টার করতে পারে।  


৪. অঞ্চল বেছে নিন: ব্যস্ত রাস্তা এবং শিল্প এলাকা এড়িয়ে চলুন। সবুজায়ন সমৃদ্ধ পার্ক বা উদ্যান নিরাপদ হতে পারে, কারণ গাছপালা কিছুটা দূষণ শোষণ করতে পারে।  


৫. সময়সীমা কমিয়ে আনুন: হাঁটার সময় সংক্ষিপ্ত করুন। দীর্ঘ সময় দূষিত বাতাসে থাকা বিপজ্জনক হতে পারে।  


৬. অন্তর্নিহিত বিকল্প বেছে নিন: ঘরের ভেতরে ব্যায়াম, যেমন যোগব্যায়াম, ট্রেডমিলে হাঁটা অথবা জিমে যুক্ত হন। এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখুন।  


৭. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ: দূষণজনিত অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে জল পান করুন এবং ফল, সবজি ও গ্রিন টি গ্রহণ করুন।  


৮. পোশাক পরিষ্কার রাখুন: দূষিত কণা পোশাক ও ত্বকে আটকে থাকতে পারে। হাঁটার পরপরই স্নান করুন এবং পরিষ্কার কাপড় পরুন।  

 

সকালে হাঁটা সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, উচ্চ দূষণের সময় তা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে স্বাস্থ্যের সুরক্ষা অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বায়ুর মান বুঝে এবং সতর্কতা অবলম্বন করে সক্রিয় জীবনযাপন বজায় রাখা সম্ভব।  


এই প্রতিবেদনে দেওয়া পরামর্শ শুধুমাত্র সাধারণ কিছু তথ্য প্রদানের জন্য এবং এটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামতের বিকল্প নয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আরও তথ্যের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad